Date: October 18, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / ইউরোপের আরেকটি দেশে জনসমক্ষে পর্দা করা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

ইউরোপের আরেকটি দেশে জনসমক্ষে পর্দা করা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে

October 18, 2025 12:14:42 PM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউরোপের আরেকটি দেশে জনসমক্ষে পর্দা করা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে

ইউরোপের আরেকটি দেশে জনসমক্ষে নিকাব ও বোরকা পরা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। পর্তুগালের পার্লামেন্টে একটি বিল পাস হয়েছে, যা ‘লিঙ্গভিত্তিক ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যে মুখ ঢেকে রাখার পোশাক’ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। এই বিলটি উত্থাপন করেছে পর্তুগালের অতি ডানপন্থি চেগা পার্টি। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত সংসদীয় অধিবেশনে বিলটি পাস হয়।

বিল অনুযায়ী, জনসমক্ষে নিকাব পরার ক্ষেত্রে ২০০ থেকে ৪,০০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে। এছাড়া, কাউকে জোর করে নিকাব পরাতে চাইলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে কিছু ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে। যেমন, উড়োজাহাজ, কূটনৈতিক এলাকা এবং উপাসনালয়ে নিকাব পরার অনুমতি থাকবে।

বিলটি এখনই আইন হিসেবে কার্যকর হবে না। প্রথমে এটি পাঠানো হবে সংসদের সাংবিধানিক বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে, যেখানে বিলটি পর্যালোচনা করা হবে। এরপর পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুজা এই বিলের ওপর চূড়ান্ত স্বাক্ষর করবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি চাইলে এটি পুনর্বিবেচনার জন্য সাংবিধানিক আদালতে পাঠাতে পারেন।

যদি আইন হিসেবে গৃহীত হয়, তাহলে পর্তুগালও ইউরোপে নিকাববিরোধী দেশের তালিকায় যোগ দেবে। ইতোমধ্যে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস জনসমক্ষে বোরকা বা নিকাব পরাকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে।

চেগা পার্টির নেতা আন্দ্রে ভেনচুরা দাবি করেছেন, এটি নারী স্বাধীনতা ও ইউরোপীয় মূল্যবোধ রক্ষার একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। তার ভাষায়, “আজ আমরা আমাদের মেয়েদের বোরকা থেকে রক্ষা করেছি।” অন্যদিকে, বামপন্থি নারী আইনপ্রণেতারা বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তারা বলেন, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক।

ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি আন্দ্রেয়া নেটো বলেন, এটি নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করার প্রশ্ন। কোনো নারীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখ ঢেকে রাখতে বাধ্য করা উচিত নয়।

পার্লামেন্টে বিলটি পাস হলেও ১০টি দলের মধ্যে দুইটি দল — পিপল-অ্যানিমেলস-নেচার পার্টি এবং টুগেদার ফর দ্য পিপল পার্টি — ভোটদান থেকে বিরত থাকে। তাদের মতে, এই বিল সমাজে বিভাজন বাড়াবে এবং বৈষম্য উসকে দেবে।

এদিকে, মানবাধিকার সংগঠন ও মুসলিম কমিউনিটিগুলোর মধ্যেও বিলটি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা বলছে, দীর্ঘদিন ধরে পর্তুগালকে ধর্মীয় সহনশীলতার দেশ হিসেবে ধরা হতো, কিন্তু এই সিদ্ধান্ত দেশটির সেই ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।