
নিউজিল্যান্ডের বাসিন্দা লরেন্স ওয়াটকিনস কেবল তার নামের জন্যই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান করে নিয়েছেন। তার পুরো নামের শব্দের সংখ্যা আশ্চর্যজনকভাবে ২,২৫৩টি, যা ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। দীর্ঘ এই নামের কারণে তাকে “দৈর্ঘ্যে সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত নাম” হিসেবে গিনেস বুকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তবে এই রেকর্ড এবং স্বীকৃতি অর্জন করতে তাকে দেশটির আইনি ব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে, যা শেষ পর্যন্ত দেশের নাম পরিবর্তনের আইনকেও বদলাতে বাধ্য করেছে।
লরেন্স ওয়াটকিনসের জন্ম ১৯৬৫ সালে লরেন্স গ্রেগরি ওয়াটকিনস নামে। ছোটবেলা থেকেই তার লক্ষ্য ছিল গিনেস বুকে স্থান পাওয়া। কোনো বিশেষ প্রতিভার অভাবের কারণে তিনি বিশ্বের দীর্ঘতম নাম তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৯০ সালে তিনি মূল নামের সঙ্গে আরও ২,২৫০টি নাম যুক্ত করে রেকর্ডের আবেদন করেন। যদিও অকল্যান্ড জেলা আদালত তার আবেদন গ্রহণ করলেও, রেজিস্ট্রার জেনারেল তা বাতিল করে দেন।
নিজের স্বপ্ন রক্ষা করতে লরেন্স হাই কোর্টে মামলা করেন এবং আদালত তার পক্ষে রায় দেন। তিনি জানান, “সরকারের কাছে আমার নাম পরিবর্তন অস্বীকার করার কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না, তাই আমি জিতেছি।” এই আইনি বিজয়ের পর নিউজিল্যান্ড সরকার দ্রুত নাম পরিবর্তনের আইন সংশোধন করে। নতুন আইনের অধীনে এখন কোনো নাগরিক ৭০ অক্ষরের বেশি লম্বা নাম, অথবা অফিসিয়াল পদবি, সংখ্যা বা প্রতীকযুক্ত নাম গ্রহণ করতে পারবেন না।
লরেন্স ওয়াটকিনস সিএনএনকে বলেন, “যদি আমি আবার পাগল হয়ে নাম পরিবর্তন করি, নতুন আইনের কারণে আমাকে আমার নামের ৯৮% বাদ দিতে হবে। তাতে আমি আমার গিনেস রেকর্ড হারাব, যা আমার পুরো প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য।” এই আইনি পরিবর্তনের ফলে তার রেকর্ড নিউজিল্যান্ডে স্থায়ীভাবে সুরক্ষিত হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে তিনি এখন সংক্ষেপে নিজের নাম ব্যবহার করেন—লরেন্স আলোন আলোয় ওয়াটকিনস।
চূড়ান্তভাবে বলা যায়, লরেন্সের রেকর্ড কেবল ব্যক্তিগত স্বীকৃতি নয়, এটি দেশের আইনি কাঠামোরও এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কারণ হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে।