
২০৭ রানে সীমিত স্কোর হলেও বাংলাদেশ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নজিরবিহীন জয় উদযাপন করেছে। ম্যাচের শুরুতে অবশ্য পরিস্থিতি বাংলাদেশ অনুকূলে ছিল না। দল ব্যাটিংয়ে তেমন ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেনি, ফলে মোমেন্টাম প্রথমে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে। উদ্বোধনী জুটিতে ৫১ রান তুলার পরও মনে হচ্ছিল সফরকারীরা সহজে জিততে চলেছে।
তবে পুরো ম্যাচে এই ধারা বদলে দেন রিশাদ হোসেন। তার ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেটে ভর করে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ৭৪ রানের বড় জয় নিশ্চিত করে। আজকের ম্যাচে রিশাদ ছিলেন স্পটলাইটে — ব্যাট হাতে সংক্ষিপ্ত, কিন্তু কার্যকর ক্যামিও ইনিংস খেলেন এবং বল হাতে দলের সবচেয়ে সফল খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম পাঁচ উইকেটই তার ঝুলিতে আসে। ম্যাচের শেষপর্যন্ত তিনি ৬ উইকেট তুলে নেন, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার হিসেবে গণ্য হবে।
শুরুর ১০ ওভারে বাংলাদেশের বোলাররা অনেক চেষ্টা করেও উইকেট পাননি। তাসকিন আহমেদ, তানভির আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ সকলেই কোনো বড় প্রভাব রাখতে পারেননি। ১২তম ওভারে তখন রিশাদকে আক্রমণাত্মকভাবে বল করান মিরাজ। ষষ্ঠ বলে রিশাদ এলবিডব্লিউর মাধ্যমে প্রথম উইকেট নেন, এথানেজকে ফেরান। এরপর ধারাবাহিকভাবে ব্রেন্ডন কিং, শেরফান রাদারফোর্ড, রস্টন চেজ এবং জেডেন সিলসকেও সাজঘরে পাঠান।
ম্যাচের দ্বিতীয় অংশে অধিনায়ক মিরাজও কার্যকর বোলিং দেখান। তিনি এলবিডব্লিউ ফাঁদে গুদাকেশ মোতিকে আউট করেন। তানভির ইসলাম ম্যাচের শেষ ওভারে শেই হোপকে ফেরিয়ে শেষ উইকেট নিশ্চিত করেন। মুস্তাফিজ প্রথম স্পেলে ব্যর্থ হলেও শেষ স্পেলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন।
ব্যাটিংয়ে শুরুটা ছিল ধীর ও মন্থর। ওপেনিংয়ে চলতি বছর কোনো ফিফটি আসেনি, তাই আজ সৌম্য সরকারকে প্রথমে আনা হয়। তবে সাইফ হাসান ও সৌম্যও তেমন রান করতে পারেননি। নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয় তৃতীয় উইকেটে ইনিংস গড়েন। শান্ত ৩২ রান করেন, আর তাওহীদ হৃদয় ৫১ রানে ফিফটি পূর্ণ করেন। অভিষিক্ত মাহিদুল অঙ্কনও মন্থর ব্যাটিং করেন। মূল লক্ষ্য ছিল উইকেট না হারানো।
শেষ দিকে লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটে ২০০ রানের গণ্ডি পেরোয় বড় ভূমিকা রাখেন রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম এবং নুরুল হাসান সোহান। রিশাদ ২৬ রান করে ২০০ স্ট্রাইক রেটে খেলেন, তানভীর অপরাজিত ৯ এবং সোহান ১০ বলে ৯ রান করেন। শেষ ৯.৪ ওভারে দল ৬৭ রান তোলে, তবে ৬ উইকেট হারাতে হয়।
ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশ ২০৭ রানে অলআউট হলেও, রিশাদ হোসেনের অসাধারণ বোলিংয়ে ৭৪ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ফেলে। ম্যাচের শুরুতে অধিনায়ক ফারভিজ মাহরুফ মনে করেছিলেন, ২২০–২৩৫ রান যথেষ্ট হবে। যদিও দল ২০ রান কম করেছে, বোলারদের বীরত্বের কারণে সেই অভাব ম্যাচের শেষে অনুভূত হয়নি।