
পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে এক মেডিকেল কলেজের ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ অভিযোগ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে এই ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে রাত সাড়ে ১২টায় ছাত্রী ক্যাম্পাসের বাইরে বের হতে পারল। তিনি বলেন, এই ছাত্রী একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ত, এবং এ ধরনের ঘটনার জন্য কলেজগুলোরও一定 দায় রয়েছে।
মমতা আরও জানান, এই ঘটনা ঘটে একটি বনাঞ্চলে, এবং পুলিশ প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তিনি প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশায় সমুদ্র সৈকতে মেয়েদের ধর্ষণের ঘটনাও উল্লেখ করে প্রশ্ন তুলেছেন, ওড়িশা সরকার তখন কী ব্যবস্থা নিয়েছে। মমতা মন্তব্য করেন যে, দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে এবং অন্যান্য রাজ্যে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনাও নিন্দনীয়।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পর বিজেপি নেতারা সমালোচনা করেছেন। বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া এক্স-পোস্টে বলেন, মমতা ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করছেন এবং যেসব সরকার রাতে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ, তারা নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মমতাকে পদত্যাগ করা উচিত এবং আইনের আওতায় জবাবদিহি করতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রী তার এক বন্ধুর সঙ্গে বাইরে ছিলেন। তখন কয়েকজন পুরুষ তাদের কাছে আসে, এবং জোর করে ছাত্রীকে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী ছাত্রী ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। ইতোমধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—অপু বাউরি (২১), ফিরদোস শেখ (২৩) এবং শেখ রিয়াজুদ্দিন (৩১)—এবং এক জনকে আটক করা হয়েছে। নির্যাতিতার সঙ্গে থাকা পুরুষ বন্ধুটিও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ঘটনার প্রতি ‘গভীরভাবে দুঃখিত’ প্রকাশ করেছে এবং আশ্বাস দিয়েছে যে অপরাধীরা শাস্তির বাইরে থাকবে না। পুলিশ এক্স-পোস্টে উল্লেখ করেছে, “ভুক্তভোগীর বেদনা আমাদেরও বেদনার। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আমরা কোনো গড়িমসি করব না।”
এই ঘটনা কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক বছরের মধ্যে ডাক্তার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর দুর্গাপুরে দ্বিতীয় নৃশংস ঘটনা হিসেবে সংযুক্ত হয়েছে।