
বলিউডের জনপ্রিয় দম্পতি কারিনা কাপুর ও সাইফ আলি খানের বড় ছেলে তৈমুর আলি খান এখন থেকেই সবার নজরে। জন্ম থেকেই মিডিয়ার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা তৈমুর এবার মজার এক কারণেই শিরোনামে। সে নাকি মায়ের কাছে জানতে চেয়েছে ফুটবল কিংবদন্তি লিওনেল মেসির ফোন নম্বর!
সম্প্রতি ননদ সোহা আলি খানের পডকাস্ট ‘অল অ্যাবাউট হার’-এ অতিথি হয়ে এসেছিলেন কারিনা কাপুর খান। সেখানে তিনি বড় ছেলে তৈমুরকে নিয়ে বেশ কিছু মজার তথ্য শেয়ার করেন। কারিনা জানান, তৈমুরের আগ্রহ সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী—সে অভিনয় নয়, বরং খেলাধুলায় বেশি মনোযোগী।
সোহা যখন জানতে চান, পরিবারের সবাই অভিনয়ে যুক্ত—তবুও তৈমুরের এতে আগ্রহ নেই কেন, তখন কারিনা হাসতে হাসতে উত্তর দেন, “তৈমুর এখনও খুব ছোট। সে এসব বোঝে না, আর আসলে অভিনেতাদের প্রতিও তার তেমন আগ্রহ নেই। ওর মন পড়ে থাকে ক্রিকেট ও ফুটবলে।”
কারিনা বলেন, “সে প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করে—‘তুমি কি রোহিত শর্মাকে চেনো? বিরাট কোহলির ব্যাটটা এনে দিতে পারো? লিওনেল মেসির ফোন নম্বর আছে?’ আমি বলি—না! আমি তাদের কাউকেই চিনি না। কিন্তু ওর এই আগ্রহই ওর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য।”
কারিনা আরও জানান, তৈমুরের অভিনয় বা নাটক একদম ভালো লাগে না। “স্কুলে যখন কোনও অতিরিক্ত কার্যক্রমের তালিকা আসে আর তাতে ‘ড্রামা’ লেখা থাকে, আমি জিজ্ঞেস করি—‘তুমি কি করবে?’ ও সঙ্গে সঙ্গে বলে, ‘না, আমি এটা পছন্দ করি না।’ তবে ও রান্না শেখার ক্লাসে যেতে চেয়েছিল, কারণ ও দেখে তার বাবা রান্না করে,” বলেন কারিনা।
খেলাধুলার এই ভালোবাসা তৈমুর পেয়েছে তার পারিবারিক ঐতিহ্য থেকেই। তার দাদা মনসুর আলি খান পাতৌদি ছিলেন ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও একসময়ের কিংবদন্তি ক্রিকেটার। তিনি ছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও মিডিয়াম পেসার, মাত্র ১৬ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের সাসেক্স কাউন্টি ক্লাবে খেলার মাধ্যমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দলেও খেলেন এবং প্রথম ভারতীয় হিসেবে সেই দলের অধিনায়ক হন।
এই ঐতিহ্যের ধারাই যেন বহন করছে তৈমুর। বাবা সাইফ আলি খানের সঙ্গে তার দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রিকেট আলোচনা প্রায়ই দেখা যায়। গত বছর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল যেখানে দেখা যায়, সাইফ ছেলেকে বোঝাচ্ছেন ক্রিকেট ক্লাব ও কাউন্টির ধারণা। সাইফ বলেছিলেন, “তোমার দাদার বাবা উরচেস্টারশায়ারের হয়ে খেলেছেন, আর তোমার দাদা ছিলেন সাসেক্সের অধিনায়ক।”
বলিউডের জৌলুশপূর্ণ পরিবেশে বেড়ে উঠলেও তৈমুর যেন দাদার পথেই হাঁটছে—সবুজ মাঠের প্রতি টানেই তার প্রাণ। হতে পারে, একদিন সে বাবা-মায়ের অভিনয় সাম্রাজ্য পেরিয়ে ক্রিকেট বা ফুটবলের ময়দানেই নিজের পরিচয় গড়ে তুলবে।
২০১২ সালে কারিনা কাপুর ও সাইফ আলি খানের বিয়ে হয়। তাদের দুই সন্তান—তৈমুর ও জেহ। বড় ছেলে তৈমুর এখনো ছোট হলেও তার স্বপ্ন, আগ্রহ ও স্বভাব—সবই ইঙ্গিত দেয় এক ভিন্নধর্মী ভবিষ্যতের দিকে।