
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে এক নারীর ওপর স্থানীয় জনতার হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে তার গলায় জুতার মালা পরানো হয় এবং চুল কেটে দেওয়া হয়। এ সময় তার বাড়ি ভাঙচুরের শিকার হয় এবং আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
এই হামলা শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে রহনপুর পৌর এলাকার হুজরাপুর গ্রামে সংঘটিত হয়। পরের দিন রাতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী নারীর বিরুদ্ধে স্থানীয়রা পতিতাবৃত্তি ও মাদক কারবারের অভিযোগ তুলেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত স্থানীয়রা তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং আগুন দেন। ঘটনার সময় ওই নারীকে ঘর থেকে বের করে রাস্তায় আনা হয় এবং জনতার হেনস্তার শিকার হতে হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, হুজরাপুর এলাকার ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে দেহব্যবসা এবং মাদক কারবারের মতো অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা তাকে একাধিকবার সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সতর্কতা উপেক্ষা করে এমন কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর কতিপয় ব্যক্তি গভীর রাতে বাড়িতে হামলা চালান। হামলায় বাড়ির দরজা, জানালা, আসবাবপত্র এবং একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্থানীয় জনতা নারীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় এবং চুল কেটে দেয়। গোমস্তাপুর থানার ওসি ওয়াদুদ আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পরিবারের জিম্মায় দেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে গোমস্তাপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, আর অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্থানীয় জনগণের সহিংসতায় নারী সুরক্ষা ও আইন-শৃঙ্খলার গুরুতর প্রভাব পড়ে—যা সামাজিক সচেতনতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।