
মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাতা বৃদ্ধির দাবিতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন হাজারো বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক। সচিবালয় অভিমুখে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতিও চলছিল জোরেশোরে। এমন সময় শিক্ষক নেতাদের উদ্দেশে ফোন করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, এবং আহ্বান জানান—এই মুহূর্তে লংমার্চ স্থগিত রাখার জন্য।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজীকে ফোন করে হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, সচিবালয়ে শিক্ষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক চলছে। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কোনো কর্মসূচিতে না যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। পরে অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন মাইকের মাধ্যমে শহীদ মিনারে উপস্থিত শিক্ষকদের এ বার্তা পৌঁছে দেন।
শিক্ষক নেতা দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ সবসময় আমাদের পাশে থেকেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সচিবালয়ে শিক্ষকদের বিষয়ে বৈঠক চলছে। তাই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত লংমার্চ স্থগিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।” তিনি আরও জানান, মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
এর আগে, পুলিশের বলপ্রয়োগ ও দীর্ঘদিন ধরে দাবি উপেক্ষিত থাকার প্রতিবাদে সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে সারাদেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল–কলেজের ক্লাস কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত, রোববার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ শিক্ষকদের সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে, যা এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পরে সংগঠনের নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
রোববার ও সোমবার রাতভর শহীদ মিনারের খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেন শিক্ষকরা—কেউ চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত কাটান। তাদের একটাই দাবি, প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।