
রংপুর মহানগরীতে গড়ে উঠেছে দেশের এক ব্যতিক্রমধর্মী আবাসিক হোটেল, যেখানে গরুদের জন্য পুরো নিরাপদ ও আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতি রাত মাত্র ৫০ টাকায় এখানে গরুর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু বিশ্রাম নয়, হোটেলটি গরুদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার, আলো-বাতাস এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও দিচ্ছে।
হোটেলটি মডার্ন মোড় সংলগ্ন ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকায় অবস্থিত। কোরবানি ঈদের সময় হোটেলটি সবচেয়ে বেশি জমে ওঠে, তবে বছরের বাকি সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের গরু এখানে রেখে যাচ্ছেন।
হোটেলের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী, প্রতিটি গরুর জন্য আলাদা ঘর, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস এবং খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। চারজন প্রশিক্ষিত কর্মচারী সার্বক্ষণিকভাবে গরুর যত্ন নিচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এমন নিরাপদ পরিবেশে গরু রাখা তাদের ব্যবসাকে অনেক সহজ ও ঝুঁকিমুক্ত করেছে।
গরুর ব্যাপারী রফিক মিয়া বলেন, “এখানে গরু রেখে অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকা যায়। এক রাত বিশ্রাম দেওয়ার পর গরু নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া অনেক সুবিধাজনক হয়।”
হোটেলের উদ্যোক্তা আসানুর রহমান জানিয়েছেন, সাত-আট বছর আগে শখের বসে এই হোটেলটি শুরু করেছিলেন। বর্তমানে প্রতিদিন এখানে ৩০ থেকে ৪০টি গরু অবস্থান করছে। হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি বা অতিরিক্ত রোদে গরুদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা নিশ্চিন্তে তাদের পশু রাখতে পারছেন। তিনি আরও জানান, হোটেলটি স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকজনের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করেছে।
বর্তমানে হোটেলটিতে এক সঙ্গে ১০০টি গরু রাখার ক্ষমতা রয়েছে। প্রতি গরুর জন্য এক রাতের ভাড়া মাত্র ৫০ টাকা। বিশ্রাম শেষে ব্যবসায়ীরা তাদের গরু ট্রাকে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন।
রংপুরের লালবাগ, বড়াইবাড়ি, আমবাড়ি, বেতগাড়ি ও শঠিবাড়ি হাটের আশপাশের ব্যবসায়ীরা নিয়মিত এই হোটেলের সুবিধা গ্রহণ করছেন। তাদের মতে, এই উদ্যোগ রংপুর অঞ্চলে গরু পরিবহন ও বেচাকেনায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।