
ধর্মীয় বক্তা আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনানকে ঘিরে পরকীয়ার বিতর্কের রেশ না কাটতেই, নতুন করে আলোচনায় এসেছেন আরেক ইসলামি বক্তা—মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ তুলেছেন তামান্না হাতুন নামের এক নারী, যিনি নিজেকে কাসেমীর তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেছেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ‘তামান্না হাতুন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, শরিয়াভিত্তিক বিবাহ পরামর্শ প্ল্যাটফর্ম ‘আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো (Ideal Marriage Bureau-IMB)’-এর প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী তাকে মৌখিকভাবে বিয়ে করার পর তালাক দিলেও পরে অবৈধ সম্পর্কে জড়ান।
তামান্নার দাবি, গত এক বছর ধরে কাসেমীর সঙ্গে মৌখিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন তিনি, যেখানে কাবিননামায় ১০ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে কাসেমী মুখে তালাক দেন। তবুও কাসেমী তাকে আশ্বাস দেন যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে—এমনকি তালাকের পরও তার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক বজায় রাখেন।
তামান্না আরও অভিযোগ করেন, ওই সময় তার গর্ভে সন্তান আসে। বিষয়টি কাসেমীকে জানালে তিনি বলেন, সন্তানটি “অবৈধ” এবং সেটি পৃথিবীতে আসলে উভয়ের জন্য ক্ষতিকর হবে। এরপর কাসেমী এবং তার দুলাভাইয়ের প্রথম স্ত্রী মিলে জোর করে তাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করান।
পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, গর্ভপাতের মাত্র তিন দিন পর কাসেমী কুষ্টিয়ায় গিয়ে ১৩ বছর বয়সী এক মেয়েকে বিয়ে করেন, যা এখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। এই ঘটনার পর তামান্না হাতুন ১৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে কাসেমীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তার মা ও সৎবাবা ইমাম উদ্দিনকে হুমকি দেওয়া হয়েছে—যদি তামান্না অনলাইনে এসে কিছু বলেন, তবে তার মাকে তালাক দেওয়া হবে।
ফেসবুক পোস্টে তামান্না ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, তিনি একসময় মনে করতেন, ‘আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো’-এর মাধ্যমে তিনি একটি ভালো ও ধর্মভিত্তিক উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এখন তার কাছে বিষয়টি প্রতারণা ও নারীদের ব্যবহার করার এক নিকৃষ্ট কৌশল বলে মনে হচ্ছে।
তামান্না আরও বলেন, “আমি চাইলেই আমার জীবন নতুন করে শুরু করতে পারতাম। কিন্তু ওদেরকে না থামালে, নারীদের সঙ্গে তারা একই প্রতারণা চালিয়ে যাবে। আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব এবং ন্যায়বিচার আশা করছি।”
উল্লেখ্য, এর আগে ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান-এর বিরুদ্ধেও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার পরকীয়া ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন, যা দেশজুড়ে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।