
জন্মের পর প্রথম ৫-৬ মাস শিশুর জন্য মায়ের দুধই সর্বোত্তম খাবার। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার পুষ্টির চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। তখন মায়ের দুধের পাশাপাশি সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত বাড়তি খাবার দেওয়া আবশ্যক। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য একটি নিয়মমাফিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক অভিভাবক একটি মারাত্মক ভুল ধারণা পোষণ করেন। তারা ভাবেন, শিশুকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়ালে সে দ্রুত স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠবে। এই ধারণা থেকে শিশুর ইচ্ছা না থাকলেও তাকে জোর করে খাওয়ানো হয়। খাদ্যের অভাব যেমন অপুষ্টির কারণ, তেমনি অতিরিক্ত খাবার শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনে বয়ে আনতে পারে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি। এর ফলে শিশু অল্প বয়সেই অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাসে আসক্ত হয়ে পড়ে, যা পরিবর্তন করা প্রায় অসম্ভব।
চার-পাঁচ বছর বয়সের মধ্যেই অতিরিক্ত খেতে অভ্যস্ত শিশুটি একজন প্রাপ্তবয়স্কের সমান খাবার গ্রহণ করতে শুরু করে। এর ফলস্বরূপ স্কুল জীবনে তার শারীরিক গড়ন অন্যদের চেয়ে অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। স্থূলতার কারণে সে সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলায় অংশ নিতে পারে না, পড়াশোনায় মনোযোগ হারায় এবং ধীরে ধীরে এক ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়।
এই শারীরিক অসামঞ্জস্যতা তার ভবিষ্যৎ কর্মজীবনেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অতিরিক্ত ওজন ও শারীরিক অযোগ্যতার কারণে সে কোনো চাকরিতে যোগদান করতে পারে না, এমনকি নিজের জন্যও কোনো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত পরিবারের স্বপ্নকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে সে এক হতাশাপূর্ণ ও ব্যর্থ জীবনের পথে এগিয়ে যায়।
মো. আমজাদ হোসেন
সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা