
গাজীপুর সংবাদদাতা:
গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ ওসমান গণি মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন এবং মাত্র ১৫ বছরে ঘুষ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
তবে অভিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রার ওসমান গণি মণ্ডল তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগকে "মিথ্যা ও ভিত্তিহীন" বলে দাবি করেছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওসমান গণি প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক, যা তিনি তার নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে ক্রয় করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কর্মস্থলে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে ঘুষ-বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই সম্পদ অর্জন করেছেন। দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের মাহবুবুর রহমান স্বপন নামে এক ব্যক্তি দুদকে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগের অন্যতম গুরুতর দিক হলো তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওসমান গণির জন্ম ১৯৬৬ সালের ২৪ জুলাই। অভিযোগ উঠেছে, তিনি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ‘মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী’ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সনদ লাভ করেন এবং সেই সনদের ভিত্তিতে ২০০৯ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। যেহেতু ১৯৭২ সালে মুজিবনগর সরকার বিলুপ্ত হওয়ার সময় তার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর পাঁচ মাস, তাই তার এই দাবি ভিত্তিহীন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল, হাউজিং কোম্পানির কাছ থেকে দলিলের শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ, বন বিভাগের জমি দখলের জন্য জাল কাগজপত্র তৈরি এবং অধীনস্থ নারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও কর্মস্থলে অনৈতিক আচরণের মতো অভিযোগও উঠেছে।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-রেজিস্ট্রার ওসমান গণি মণ্ডল বলেন, "একটি কুচক্রী মহল আমার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যাচার চালাচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, "আমার মুক্তিযোদ্ধা সনদ সঠিক কি না, সে বিষয়ে হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দেবে। আর আমার সম্পদের হিসাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথভাবে দেওয়া আছে।"
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হারুন অর রশিদ নামে একজন প্রকৌশলী মন্তব্য করেছেন, "এসব খবরের অধিকাংশই মিথ্যা।" অন্যদিকে অনেকেই অভিযোগগুলো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে সত্য উদঘাটন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।