
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী এক শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন পারজোয়ার ব্রাহ্মণগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলামের সাথে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট বিকেল ৩:৩০ টার দিকে বহিরাগত ৩০-৩৫ জন ব্যক্তি শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষকদের জিম্মি করে। এক পর্যায়ে তারা সিনিয়র শিক্ষক জাহিদুল ইসলামের কাছে একটি কাগজ এগিয়ে দিয়ে তাতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে জানা যায়, সেটি ছিল তার পদত্যাগপত্র। স্বাক্ষর নেওয়ার পর দুর্বৃত্তরা সহকারী প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে কিছুক্ষণ অবস্থান করে চলে যায়। এ ঘটনার সময় উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মচারীরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং ওই শিক্ষককে চিন্তা না করার অনুরোধ করেন। তবে, দুদিন পর জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ ওই স্কুলের সভাপতি হিসেবে পদত্যাগপত্রের একটি রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, "আমি এই বিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে সুনামের সাথে কর্মরত আছি। ২৫ আগস্ট আনুমানিক বিকেল তিনটার দিকে বহিরাগত কিছু ব্যক্তি শিক্ষার্থী পরিচয়ে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষকদের কমনরুমে আমাদের জিম্মি করে ফেলে এবং আমার সামনে একটি কাগজ দিয়ে বলে এখানে স্বাক্ষর করতে হবে, না হলে আমার ক্ষতি সাধন করা হবে। উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মচারীরা হতবিহ্বল হয়ে যায়। আমি ভয়ে ওই কাগজটিতে স্বাক্ষর করি। পরবর্তীতে জানতে পারি এটি স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র।"
তিনি আরও বলেন, "গত ৯ বছর যাবত এই স্কুলে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি নিজের হাতে লিখিত কোনো পদত্যাগপত্র জমা দেইনি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, যা তদন্তের দাবি রাখে। আমি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রথম থেকেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করি, এতে ম্যানেজিং কমিটির একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আমি এই ষড়যন্ত্রের শিকার।"
তিনি সরকারের উচ্চ মহলে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি করেন এবং তার চাকরি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।