
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে পৌর প্রশাসকের বিরুদ্ধে হয়রানি, হামলা ও সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ তুলেছে নোয়াখালী জাতীয় হকার্স সমবায় সমিতি। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান হাজী মো. ইউছুপ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৬ অক্টোবর বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও চৌমুহনী পৌর প্রশাসক মো. আরিফুর রহমান সমিতির কার্যালয়ে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর, মালামাল ভাঙচুর ও সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক নিয়ে গেছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান হাজী ইউছুপ অভিযোগ করে বলেন, "গত ৬ অক্টোবর বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটে ইউএনও ও পৌর প্রশাসক মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল আমাদের অফিসে এসে সচিব আবুল খায়ের রাসেল ও পিয়ন মমিন উল্যাহ সুমনকে মারধর করে। তারা অফিসের আলমারি ভেঙে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায় এবং বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন, "প্রশাসকের নির্দেশে সমিতির নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ডাস্টবিন, দুই সদস্যের দোকানের সিঁড়ি এবং মার্কেটের অস্থায়ী খুঁটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব জায়গায় জোরপূর্বক শৌচাগার নির্মাণের চেষ্টা চলছে। এছাড়া সমিতির ময়লা পরিষ্কারের বক্স ও ৩০টি ভ্যানগাড়িও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।"
তিনি একটি গুরুতর অভিযোগ তুলে বলেন, "হাইকোর্ট ও জজকোর্টের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ডটিও তারা ভেঙে ফেলে। এ সময় ইউএনও হাইকোর্টকে অবমাননা করে মন্তব্য করেন এবং সমিতির পরিচালকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।"
হাজী ইউছুপ জানান, তাদের সমিতি প্রতি বছর পৌরসভাকে প্রায় ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ মার্কেটের রাস্তার লাইট বন্ধ করে দিয়েছে এবং সুইপার প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে গত ছয় মাস ধরে মার্কেটে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে ব্যবসায়ীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া মার্কেটের সামনের ইউ-টার্নের কারণে ব্যবসায়ীরা বড় গাড়িতে মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারছেন না বলে তিনি জানান।
১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সমিতি উচ্ছেদ হওয়া হকার ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার আগে একটি "কুচক্রী মহল" সমিতির অর্থ আত্মসাৎ করেছিল।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমিতি কর্তৃপক্ষ তাদের ওপর চালানো নির্যাতন ও হয়রানির বিচার দাবি করেছে। একইসঙ্গে তারা মার্কেটের আবর্জনা দ্রুত অপসারণ, ইউ-টার্ন সরানো এবং একটি নতুন শৌচাগার নির্মাণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।